একবিংশ শতাব্দীতে এসে এখন প্রায় সবার কাছেই আছে একেকটি স্মার্টফোন। আর স্মার্ট ফোনের অন্যতম একটি ফিচার হলো অ্যালার্ম ক্লক। তবে, সকালে ঘুম থেকে উঠতে স্মার্টফোনের সাহায্য না নিয়ে পুরানা যুগের অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহার করাটাই বেশি ভালো। কেন? জানতে হলে পড়ুন।

স্মার্টফোনে অ্যালার্ম বাজার অপশন থাকলেও ঘুম ভাঙ্গানোর কাজে একটা আলাদা অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহার করাই ভালো। তবে এমনটা বলার প্রধান কারণগুলি আমাদের প্রতিদিনকার বদঅভ্যাসগুলোর ভেতরেই লুকিয়ে আছে।
প্রথমত, অনেকেরই রাতের বেলা ঘুমুতে যাবার আগে ফেসবুক, টুইটার বা ইন্সটাগ্রামের নিউজফিডে স্ক্রল করার একটা বাজে অভ্যাস আছে। আপনি ঘুমুতে যাবার সময় যখন মোবাইলে অ্যালার্ম সেট করতে যাবেন তখন প্রায়ই অ্যালার্ম সেট করার পর নিজের অজান্তেই আপনাকে ফেসবুকের হোমপাতায় আবিষ্কার করবেন। আপনার রাতের ঘুমের সবচেয়ে বড় শত্রুটি স্মার্টফোনের নীল আলো। আর সত্যি করে বলতে গেলে, রাতের বেলা পরিচিত, অপরিচিত মানুষদের ছবি স্ক্রল করাটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনার ঘুমের সময়টাকে কমানো ব্যতিত অন্য কিছুই করে না।
নাইফ শিফটের কথা আসায় এটা নিয়ে একটু বিস্তারিত বলে রাখা ভালো। স্মার্ট ফোনের ডিসপ্লে থেকে একটা নীলচে উজ্জ্বল আলো বের হয়। এই আলোটা আপনার মস্তিস্ককে একটা ভুল তথ্য দেয়। আর সেটা হলো, এখন সকাল হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের ক্ষতি করে এই বার্তাটি। বর্তমানে প্রায় সকল ফোনে এবং পিসি/ম্যাকে ডিসপ্লে থেকে এই নীলচে আলো বের হওয়া বন্ধ করার জন্যে আলাদা ফিচার রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি “নাইট শিফট” বা নাইট লাইট নামে পরিচিত।
রাতে ঘুমানোর ব্যাপারে অনেক কিছুই বলা হয়েছে। এবার আসুন সকালে কী ঘটে সেটিকে যাই। মোবাইল ফোনে অ্যালার্ম বাজলে সেটা বন্ধ করার জন্য আমাদের ঘুম থেকে উঠে সবার আগে মোবাইলটাকেই হাতে নিতে হয়। অনেকে আবার মনে করে, ঘুম থেকে উঠে সরাসরি মোবাইল টিপলে ঘুম ঘুম ভাবটা কিছুই কেটে যায়। কিন্তু তাই বলে ঘুম থেকে উঠেই কতক্ষণ মোবাইল টিপছেন সেই হিসাবটা কি থাকে? দেখা যায়, ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে যে সময়টায় একটু ওয়ার্কআউট করতে পারতেন। বা বাইরে গিয়ে একটু হাটাহাটিও সেরে আসতে পারতেন; সেই সময়টা মোবাইল হাতেই পার হয়ে যাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল টেপার মাধ্যমে একটা বাজে দিনের শুরু হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপারটা হলো, প্রতিদিন একই কাজ করতে করতে একসময় এটা একটা বাজে অভ্যাসে পরিণত হয়। পাশে যে মানুষটা ঘুমিয়ে আছে তাকেও হয়তো আর “গুড মর্নিং” বলে ঘুম থেকে তোলার কথাটি মাথায় আসে না।
ঘুমানোর আগে এবং ঘুম থেকে উঠে স্মার্টফোন ব্যবহারের যে বাজে অভ্যাসটা গড়ে উঠেছে সেটিকে ঠিক করতে অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহারের বিকল্প কোনোকিছু হতে পারে না। আর এজন্য যে খুব বেশি টাকা খরচ করতে হবে এমনটাও না। যেকোনো ঘড়ির দোকানে গেলেই একেবারে অল্প খরচের মধ্যে সুন্দর সুন্দর টেবিল ক্লক পাবেন যেগুলি বেশ ভালোভাবে অ্যালার্ম বাজাতে সক্ষম। সুন্দর দেখে একটা ঘড়ি কিনলে সেটি যেমন বারবার মুঠোফোনের পর্দায় তাকানোর বদঅভ্যাসটা দূর করবে তেমনি ঘরের সৌন্দর্য্যটাও কিছুটা হলেও বাড়াবে।
সম্পাদনা: মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
[[লেখা সম্পর্কিত আপনার যেকোনো মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের মন্তব্য বক্সে বা ভেরিফাইড প্রেসের ফেসবুক পাতায়।]]
Leave a Reply