ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়গুলির ভেতরে একটি হলও শরীর থেকে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলা।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কেবলমাত্র নিজেকে আরও আকর্ষনীয় করতেই নয়; ক্ষতিকর এসব রোগের ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতেও প্রয়োজন শরীরকে মেদমুক্ত করা। বিশেষ করে ভুড়ি কমানোটা প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।
জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ব্রাইডসাইড অবলম্বনে আমরা এই ব্লগ পোস্টে আলোচনা করবো ভুঁড়ি কমাতে কার্যকর কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে। পোস্টের শিরনামেই বলা আছে মাত্র ত্রিশ দিনে ভুঁড়ি থেকে মুক্তির কথা। তবে সেজন্যে মানতে হবে একটি শর্ত। আপনাকে এই ত্রিশ দিনের প্রতিটা দিনকেই শুরু করতে হবে নিচের ব্যায়ামগুলির ভেতরে যেকোনো চারটিকে দিয়ে। সময়কাল দেওয়া আছে প্রতিটি ব্যায়ামের সাথেই। প্রতিটি ব্যায়ামই সরাসরি অ্যাবডোমিনাল মাসেলের সাথে সংশ্লিষ্ট।
১. ক্রাঞ্চেস (১৫ বার)
প্রথমে মেঝেতে একটি ম্যাট বা চাদর বিছিয়ে পিঠের উপর সোজা হয়ে শুতে হবে। তারপর হাঁটু ভাজ করে দুই হাত কাঁধের পেছনে রেখে কেবলমাত্র পিঠের উপর ভর করে শরীরের উপরিভাগকে উপরে তুলতে আর নামাতে হবে।
২. ডাবল লেগ রিচ (১০ বার)
ডাবল লেগ রিচ একটি খুবই কার্যকর অ্যাবডোমিনাল ব্যায়াম। এটি করার জন্যে প্রথমে পিঠের উপর ভর করে উপরের দিকে তাকিয়ে মেঝেতে সোজা হয়ে শুতে হবে। তারপর হাত এবং পাগুলিকে ছাদের দিকে তুলতে হবে। এরপর মাটির সাথে ৪৫ ডিগ্রি কোণে পা এবং শরীরের উপরিভাগকে ধীরে ধীরে যতটা সম্ভব উপরের দিকে তুলতে হবে। একবার তোলা হয়ে গেলে আবার আগের অবস্থানে ফিরে বিরতি নিয়ে একই কাজের পুনরাবুত্তি করে যেতে হবে দশবার।
৩. আর্ম প্লাংক উইথ নি ডিপ (১৫ বার)
এই ব্যায়ামটি কেবলমাত্র আপনার অ্যাবডোমিনাল না, হাত, কাঁধ এবং পায়ের জন্যেও উপকারি। এটি করার জন্যে প্রথমে হাত এবং পায়ের উপর ভর করে মেঝের দিকে মুখ করে আধশোয়া একটি অবস্থানে আসতে হবে। এরপর শুরুতে বাম পায়ের হাঁটুটিকে ধীরে ধীরে কোমড়ের দিকে আনতে হবে। কয়েক সেকেন্ড কোমড়ের কাছাকাছি রেখে ধীরে ধীরে আগের অবস্থানে নিয়ে ডান পা-কে একইভাবে কোমড়ের দিকে আনতে হবে। এভাবে করে মোট পনেরোবার ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে।
৪. রোল-আপস (১০ বার)
রোল আপস অ্যাবডোমিনালকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্পাইনের স্থিতিস্থায়িকতা বাড়ায়। এই ব্যায়ামটি করার জন্যে হাত-পা একেবার টানটান করে পিঠের উপর ভর করে সোজা হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়তে হবে। হাত থাকবে টান টান অবস্থায় মাথায় উপরে। এবার হাত এবং পা কোনোভাবে না নাড়িয়ে হাত মাথার উপরে থাকা অবস্থাতেই বসতে হবে। কিছুক্ষণ বসে থেকে আবার শুয়ে পড়তে হবে। পর পর দশবার এই ব্যায়ামটি করতে হবে।
৫. প্লাংক হিপ ডিপস (২০ বার)
পুশ-আপের অবস্থানে ব্যায়ামটি শুরু করতে হবে। মেঝের উপর হাত থাকবে শরীরের সাথে ৯০ ডিগ্রি কোণে। তারপর হাত ৯০ ডিগ্রিতে রাখা অবস্থাতেই কোমড় উপরে তুলতে আর নিচে নামাতে হবে। হাতের অবস্থান বদলাতে পারে। কিন্তু শরীরের সাথে শুরুতে যেই কোণে ছিলো সেই একই কোণে থাকবে।
৬. বোট পোজ, ১ বার
বোট পোজ বা নাভাসানা অ্যাবডোমিনাল মাসেল, পা এবং কোমড়কে শক্তিশালী করে। বোট পোজের জন্যে হাঁটু ভাঁজ করে মেঝেতে বসতে হবে। তারপর একটু পেছনের দিকে ঝুঁকে পা দুটিকে মেঝে থেকে সোজা করে উপরের দিকে তুলতে হবে। একইসময়ে ভারসাম্য রক্ষার জন্যে হাত দুটিকে একেবারে টান টান করে পায়ের দুই পাশে নিয়ে নিতে হবে। এভাবে করে ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট পযর্ন্ত আপনার শরীরের পুরো ভর থাকবে অ্যাবডোমিনাল মাসেলের উপর। এই ব্যায়ামটি দিনে একবারের বেশি না করাই ভালো।
৭. উইন্ডশিল্ড (১০ বার)
এই ব্যায়ামটি আপনার পুরো শরীরকে শক্তিশালী করে। ওয়ার্কআউটের একেবারে শেষেরদিকে এটি করা ভালো। এটি করার জন্যে পিঠের উপর ভর করে মেঝেতে শুয়ে পা সোজা উপরের দিকে তুলে ফেলতে হবে। দুই হাত থাকবে দুই পাশে মেঝের উপর একেবারে সোজা ও টান টান অবস্থায়। এরকম অবস্থায় পা দুটিকে সোজা রেখেই যেকোনো একদিকে সরাতে হবে। তারপর সরাতে হবে আরেকদিকে। আপনার পা দুটি এখানে গাড়ির সামনে থাকা ওয়াইপারের মতন করে নড়াচড়া করবে। ব্যায়ামটি একবারে মোট দশবার করতে হবে।
৮. মাউন্টেইন ক্লাইম্বার (১৫ বার)
এই ব্যায়ামটি একটু বেশি পরিশ্রমের। হৃদস্পন্দন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে এটি। মাউন্টেইন ক্লাইম্বারের জন্যে আপনাকে তিন নম্বর ব্যায়ামের অবস্থান থেকেই শুরু করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে হাত দুটির মাঝখানে একটু দূরত্ব থাকবে। এরকম ডান হাঁটুটিকে যতটা সম্ভব বুকের কাছাকাছি আনতে হবে। ডানটিকে আনা হয়ে গেলে আগের অবস্থানে নিয়ে বাম হাঁটুটাকে একইভাবে সামনের দিকে আনতে হবে। এভাবে মোট পনেরোবার ব্যায়ামটি করতে হবে।
[[লেখা সম্পর্কিত আপনার যেকোনো মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের মন্তব্য বক্সে বা ভেরিফাইড প্রেসের ফেসবুক পাতায়।]]
Leave a Reply