বিশ্বের বেশীরভাগ মানুষ যে সব অসুখে ভোগে তার মধ্যে কোমর ও পা ব্যথা অন্যতম। চলুন জেনে নেওয়া যাক পা ও কোমর ব্যথা থেকে মুক্তির ছয় উপায়।

ক্লাসিক রিহ্যাবিলিটেশন ইন. তাদের এক গবেষণায় বলেছে যে কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই ১০০ মিলিয়নের বেশী মানুষ ভোগে দীর্ঘস্থায়ী হাঁটু ব্যথায়। আর সেই দীর্ঘস্থায়ী হাঁটু ব্যথায় ভোগা মানুষদের ১৫-২০ শতাংশ পুরুষ আর ২০ শতাংশই নারী। হাঁটু ব্যথার কারণে আপনি কোমরের নীচে ও পায়েও ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এই ব্যথার স্থায়িত্ব এত বেশী যে, প্রথম দিকে অসহনীয় মনে হলেও দিনের পর দিন ব্যথা সহ্য করতে করতে একসময় ব্যথাই হবে আপনার সঙ্গী। বিশেষজ্ঞদের মতে, এইসব ব্যথা থেকে মুক্তির পথ ব্যায়াম। তাই আপনারা যারা হাঁটু, পা কিংবা কোমরে ব্যথা বয়ে বেরাচ্ছেন, নীচের ব্যায়াম গুলো নিয়মিত অনুশীলন করুন; ব্যথা থেকে মুক্তি মিললেও মিলতে পারে-
ওয়াল স্কোয়াডস
আপনার হাঁটুতে যদি সামান্য পরিমাণ ব্যথাও থাকে তবে দেয়ালের সাথে পিঠ ও ঘাড় শক্ত করে হেলান দিয়ে দাঁড়াতে হবে। এবার ধীরে ধীরে হাঁটু ভাঙতে চেষ্টা করুন। যদি ব্যথা অনুভূত হয় তবে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যান, কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে নিন। এবার আবার ধীরে ধীরে হাঁটু ভাঙতে চেষ্টা করুন। ভুলে যাবেন না, হাঁটু ভাঙতে চেষ্টা করার সময় দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়েই রাখতে হবে। হাঁটু ভেঙে ৯০ ডিগ্রি করার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে ১০ সেকেন্ড থাকুন একই অবস্থায়। প্রথম দিকে ৯০ ডিগ্রি করে থাকতে না পারলে উঠে পড়ুন। কিন্তু আস্তে আস্তে ওই অবস্থায় কিছু সময় থাকার চেষ্টা করুন।
স্টেপ-আপস
এই ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে সিড়িতে দাঁড়াতে হবে। এক পা সিঁড়ির উপরের ধাপে এবং অন্য পা সিঁড়ির নীচের ধাপে রেখে ৯০ডিগ্রির বেশী হাঁটু না ভাঙিয়ে সিঁড়ির উপরের ধাপে উঠতে হবে এবং সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস নিতে হবে। আবারো হাঁটু ৯০ ডিগ্রির বেশী না ভাঙিয়ে সিঁড়ির নীচের ধাপে ফিরে আসতে হবে।
হিল পাম্পার
হাঁটু ব্যথার জন্য কার্যকর আরেকটি ব্যায়াম হচ্ছে পায়ের নীচে টেনিস বল দিয়ে চাপ দেওয়া। এজন্য উঁচু স্থানে বসে পায়ের তালুর মধ্য বরাবর একটি টেনিস বল রেখে তার উপর একটু পর পর চাপ দিতে হবে। এভাবে ২ মিনিট চাপ দেওয়ার পর উঠে দাঁড়াতে হবে এবং কিছু সময় হাঁটতে হবে। এর ফলে আপনি ব্যথার সাথে সাথে দুশ্চিন্তা থেকেও কিছুটা রেহাই পাবেন।
ওয়াল পুশ
পা ব্যথার জন্য কার্যকর ব্যায়ামটির নাম ওয়াল পুশ। এজন্য আপনাকে আপনার দু’হাত কাঁধ বরাবর দেয়ালে রাখতে হবে। আপনার একটি পা থাকবে অন্য পা থেকে সামনে, দেয়াল থেকে ৩০ সেন্টিমিটার দূরে। এবার সামনের পায়ের হাঁটু ভেঙে দেয়ালে চাপ দিতে হবে। কিছুতেই সামনের হাঁটু ৯০ ডিগ্রির বেশী ভাঙা যাবেনা এবং পিছনের হাঁটু একদম সোজা থাকবে। এভাবে কিছুক্ষণ সামনে দিকে চাপ দিতে হবে ও ফিরে আসতে হবে।
হিপ ব্রিজ
হিপ ব্রিজ ব্যায়ামের জন্য আপনাকে মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর হাঁটু ভাজ করে আপনার পায়ের গোড়ালি নিজের নিতম্বের কাছে আনতে হবে। তারপর কাঁধ ও হাঁটুতে ভর দিয়ে নিতম্বকে শূণ্যে তুলে দিতে হবে যতটা সম্ভব। আপনার কাঁধ আর পায়ের তালু থাকবে মেঝের সাথে লাগানো অবস্থায় আর দেহের বাকি অংশ থাকবে শূণ্যে। এতে আপনার শরীর অনেক হালকা বোধ হবে।
লেয়িং ল্যাটেরাল লেগ রাইজেস
এই ব্যায়ামটি আপনার পায়ের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এই ব্যায়ামের জন্য আপনাকে মেঝেতে ডান কাঁধের উপর ভর করে শুতে হবে। আপনার বাম পা থাকবে ডান পায়ের উপর আর শরীর থাকবে একদম সোজা। এবার আপনার বাম পা টি যতটা উঁচুতে সম্ভব উঠিয়ে আস্তে আস্তে নামিয়ে আনুন। এভাবে কিছুক্ষণ চালিয়ে একই পন্থায় বাম কাঁধে শুয়ে ডান পা উঠাতে ও নামাতে হবে।
সম্পাদনা: মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
[[লেখা সম্পর্কিত আপনার যেকোনো মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের মন্তব্য বক্সে বা ভেরিফাইড প্রেসের ফেসবুক পাতায়।]]
Leave a Reply