প্যালেস্টানিয়ান করেসপন্ডেন্ট হানা হাম্মাদ বোমার আঘাতের পরেও “লাইভে” সংবাদ সংগ্রহ করে যাচ্ছিলো, এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। আসলেই কি এরকম কিছু ঘটেছে?

ফেসবুকে লানা মোনালিজা নামে একজনের প্রোফাইল থেকে ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে প্রকাশিত হয় উপরের ছবিটি। ছবির সাথে থাকা ইংরেজি ক্যাপশনের বাংলা করলে দাঁড়ায়, “প্যালেস্টানিয়ান করেসপন্ডেন্ট হানা হাম্মাদ ইসরায়লি সৈন্যদের গ্যাস বোমার আঘাতের পরেও লাইভ নিউজ চালিয়ে যান।”
পোস্টটি নিঃসন্দেহে “হানা হাম্মাদ” নামক সেই সাংবাদিকের সাহসিকতা এবং পেশাদারীত্বের পরিচয় বহন করে। তবে সমস্যা একটি জায়গাতে। ফেসবুকে ছবিটি এমনভাবে পোস্ট করা হয়েছে যে সেটি দেখে মনে হচ্ছে ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা একটি ঘটনা। যেটি মোটেও সত্যি নয়। পাশাপাশি, ভুলে ভরা তথ্য রয়েছে ছবিটিতে। চলুন, একটি একটি করে সব তথ্যগুলো যাচাই করে নেওয়া যাক।
ছবির ঘটনাটি ঘটে ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর। ঘটনাস্থল, ইস্ট জেরুজালেম। দ্যা গার্ডিয়ানের সংবাদ থেকে সময় সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়। পাশাপাশি পাওয়া যায় আরও কিছু তথ্য। আক্রান্ত সংবাদকর্মীর পুরো নাম হানা মোহাম্মেদ। তিনি লেবানন-ভিত্তিক টেলিভিশন স্টেশন আল-মায়াদিনের একজন কর্মী। আর আঘাত করা বোমাটি মোটেও কোনো স্মোক বোম্ব ছিলো না। সেটি ছিলো এক প্রকারের স্টান গ্রেনেড।
সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে স্টান গ্রেনেড ছোঁড়া হয় প্রচুর শব্দ তৈরি করে শত্রুপক্ষকে কাবু করার জন্য। শব্দ তৈরি করা ব্যতিত স্টান গ্রেনেড সাধারণত আর কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তবে এক্ষেত্রে সেটি সরাসরি হানা মোহাম্মেদের মুখে আঘাত হানায় ক্ষতবিক্ষত হয় তার চেহারা। স্টান গ্রেনেড দ্বারা আক্রান্ত হবার পুরো ভিডিওটি রয়েছে ইউটিউবে। দূর্বলচিত্তের হলে ভিডিওটিকে এড়িয়ে যান।
বিভিন্ন বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায়, ইসরায়লি পুলিশ ও প্যালেস্টানিয়ান আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে সেই সংবাদ প্রচার করছিলেন তিনি। সংবাদ প্রচার করার সময় ইসরায়লি পুলিশের নিক্ষেপ করা একটি স্টান গ্রেনেড দ্বারা আক্রান্ত হন হানা। ভিডিওতে তাকে ব্যথায় চিৎকার করতে দেখা যায়। আক্রান্ত হলে আশেপাশের মানুষজন তাকে তুলে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যান।
পরবর্তীতে কয়েক ঘণ্টা পর মুখে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে আসেন তিনি। বর্ণনা করেন সেই এলাকার অবস্থা। সব তথ্য বিবেচনা করে এটাই বলা যায় যে, হানা মাহমেদের ছবিতে থাকা বেশ কিছু তথ্য সঠিক হলেও পর্যাপ্ত তথ্য ছবিটির সাথে দেওয়া হয়নি। ফলে সেটি ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে।
[[লেখা সম্পর্কিত আপনার যেকোনো মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের মন্তব্য বক্সে বা ভেরিফাইড প্রেসের ফেসবুক পাতায়।]]
Leave a Reply