
খারাপ জিনিস দ্রুত গ্রহণ করার শক্তি আমাদের অনেক বেশি। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন আপনি, সেই ছোটকাল থেকেই যখন একটা শিশুকে এটা করবে না, ওটা করবে না বলা হয়, তখন শিশুটির আগ্রহ ওই জিনিসটার প্রতিই জন্মায়। ওই জিনিসটার প্রতি আগ্রহ জন্মানোর কারণে আপনি প্রচণ্ড বিরক্ত হন, কখনো কখনো মারধোরও করেন। আপনি জানেন বিষয়টি খারাপ কিন্তু ওই শিশুটিকে কি আপনি বুঝিয়েছিলেন? ওই জিনিসটা খারাপ কিংবা কেন খারাপ সেটা বলেছিলেন?
রোহিঙ্গা আমাদের দেশে এ মুহূর্তে খুব পরিচিত একটি শব্দ। কিন্তু শব্দটি রূপ নিয়েছে গালিতে। ওই যে বললাম খারাপ জিনিস গ্রহণ করার শক্তি আমাদের দ্রুত। তাই দেশের ‘বোঝা’কে আমরা দিচ্ছি গালি। সেদিন পথ দিয়ে হাঁটছিলাম। বন্ধু-বান্ধবদের জটলায় কেউ একজন বলছে, “তুই শালা রোহিঙ্গা”! বিষয়টা অনেকেই উপভোগ্য করে তুলছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো মানবিক ও স্পর্শকাতর বিষয়টিকে আমরা গালিতে পরিণত করে তুলছি। এটাই কি হওয়ার কথা ছিল? ওই যে বললাম খারাপ জিনিসটা দ্রুত গ্রহণ করেছি। পত্রপত্রিকায় আমরা পড়েছি এত লাখ রোহিঙ্গা এসেছে, এদের আবাসস্থল নাই, এরা দেশের বোঝা। এসব চিন্তা করতে করতে আমরা ভেবেছি রোহিঙ্গারা খারাপ, বদ, দুষ্ট শ্রেণীর লোক। কিন্তু একবারও হয়তো ভাবতে পারিনি যে তারা আজ সীমান্ত অতিক্রম করে নিজ থেকে পালিয়ে আরেকটি দেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। হ্যাঁ! আবারও বলছি, আশ্রয় নিয়েছে।
তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজ যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তাঁদের পরিচয়টাকেই আমরা পরিণত করছি একটা গালিতে। তারা একটা গোষ্ঠী। তারা নির্যাতিত, তারা নিপীড়িত। আমরা মানবিকতা যেহেতু দেখাতে পেরেছি, ঠিক একইভাবে আমরা নিজেদের চিন্তা চেতনাকেওে পাল্টাতে পারব। আসুন খারাপটা বর্জন করি। রোহিঙ্গা কোনো গালি হতে পারে না।
লেখা:তানজিম ফারাবি | কন্টেন্ট রাইটার | অ্যামিটি
সম্পাদনা: মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
[[লেখা সম্পর্কিত আপনার যেকোনো মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের মন্তব্য বক্সে বা ভেরিফাইড প্রেসের ফেসবুক পাতায়।]]
Leave a Reply