বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পাহাড়বেষ্টিত নিচু সমতল ভূমি আর এরই অবিচ্ছেদ্যাংশ হলো হাকালুকি হাওর। এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর।

ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় উড়ে বেড়ায় বর্ণিল নানা ধরনের কীটপতঙ্গ। শীতকালে দেখা যায় পরিযায়ী পাখির ঝাঁক। পাতিকুট, ভূতিহাঁস, লেঞ্জাহাঁস, চকাচকি এর মধ্যে অন্যতম। সাপ, কচ্ছপও দেখা যায় এখানে। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে হাওরের চারদিকে গড়ে উঠছে অসংখ্য বসতি।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা পাহাড়বেষ্টিত নিচু সমতল ভূমি। এর উত্তরে রয়েছে ভারতের মেঘালয় পর্বতমালা, পূর্বে মণিপুরের উঁচু ভূমি এবং দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্যের পর্বতশ্রেণি। প্রতিবছর এ নিচু অঞ্চল বর্ষার জলে প্লাবিত হয়ে ধু ধু সাগরে পরিণত হয়। আর এরই অবিচ্ছেদ্যাংশ হলো হাকালুকি হাওর।
হাকালুকি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওর। আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর। এর মধ্যে ২৩৮টি বিল রয়েছে যার আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এসব বিলে সারাবছরই কমবেশি জল থাকে। জুরী ও পানাই নদী এ হাওরের জলপ্রবাহ ঠিক রাখায় জলজ জীববৈচিত্র্যের অন্যতম আধারে পরিণত হয়েছে হাকালুকি। বর্ষাকালে জলপ্রবাহ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২ থেকে ৬ মিটার। তখন দেখা যায় হাওরের অন্যরূপ। থৈ থৈ জলে হিজল করচ মাথা উঁচু করে ভাসতে থাকে। হাওর পরিণত হয় জলাভূমির বনে। শীতকালে জল শুকিয়ে গেলে পাল্টে যায় চিত্র। উজান থেকে বয়ে আসা পলিতে হাওরের মাটি উর্বর হয়ে ওঠে। যার ফলে জন্মে প্রচুর জলজ উদ্ভিদ। এর মধ্যে রয়েছে শাপলা, পদ্ম, চাঁদমালা, সিঙ্গারা ইত্যাদি। এসব উদ্ভিদের অনবদ্য সৌন্দর্যে মোহিনীয় হয়ে ওঠে হাওর প্রতিবেশব্যবস্থা। রঙ-বেরঙের ফুলে সৌন্দর্য ছড়ায়। এসব উদ্ভিদ পচে মাটির উর্বরতা আরও বৃদ্ধি করে। এছাড়া হিজল, করচ, বরুণ প্রভৃতি উদ্ভিদ দেখা যায় হাওরে। এই গাছগুলো সাধারণত উঁচু কান্দায় জন্মে। হাওরে প্রচুর ধান হয়। ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় উড়ে বেড়ায় বর্ণিল নানা ধরনের কীটপতঙ্গ। শীতকালে দেখা যায় পরিযায়ী পাখির ঝাঁক। পাতিকুট, ভূতিহাঁস, লেঞ্জাহাঁস, চকাচকি এর মধ্যে অন্যতম। সাপ, কচ্ছপও দেখা যায় এখানে। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে হাওরের চারদিকে গড়ে উঠছে অসংখ্য বসতি। তাদের অধিক চাহিদা পূরণের জন্য গাছ উজাড় ও জলজ উদ্ভিদ আহরিত হচ্ছে। ফলে আবাসস্থলের অভাবে কমে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী। অবৈধ শিকারের কারণে হুমকির মুখে অসংখ্য পাখি। এভাবেই বিপন্ন হচ্ছে হাকালুকি হাওর।
হাকালুকি হাওরের জানা-অজানা আরও অনেক কিছু নিয়ে সাজানো হয়েছে এ সপ্তাহের আকর্ষণীয় পর্ব ‘হাকালুকি হাওর’। মুকিত মজুমদার বাবুর পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় বাংলাদেশের প্রথম জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নিয়ে ধারাবাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘প্রকৃতি ও জীবন’ প্রচারিত হচ্ছে চ্যানেল আইয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১১.৩০ মিনিটে, পুনঃপ্রচার প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২.০৫ মিনিট এবং রবিবার ভোর ৫.৩০ মিনিটে।
ছবিঃ ছবিওয়ালা
[[সাপ্তাহিকের সৌজন্যে]]
Leave a Reply