বিড়াল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আর আপনি যদি একজন ক্যাট-প্যারেন্ট হয়ে থাকেন তবেতো কথাই নেই!

বিড়াল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। আর আপনি যদি একজন ক্যাট-প্যারেন্ট হয়ে থাকেন তবেতো কথাই নেই! বিড়ালটিকে ভালোভাবে রাখার জন্যে আপনি কতোকিছুই না করেন! কিন্তু আপনার এতো প্রচেষ্টার পরেও আপনার বাসায় থাকা তুলতুলে শরীরের এই প্রাণীটির জীবন কিন্তু কোন না কোন জটিলতায় থাকতে পারে। হাজার হোক, একজন মানুষের সাথেই থাকতে হচ্ছে তাকে। নিয়মিত গোসল করতে হচ্ছে, নখ কাটতে হচ্ছে, জিনিসপত্র ভেঙ্গে বকা শুনতে হচ্ছে। তবে আপনি চাইলে আপনার আশেপাশে পড়ে থাকা জিনিসগুলো ব্যবহার করেই তার জীবনটাকে আরো সহজ করে দিতে পারেন। ইউটিউব ঘেঁটে আমাদের লাইফহ্যাক সিরিজের এই পর্বে নিয়ে এসেছি আপনার আদরের বিড়ালটির (এবং অবশ্যই আপনার নিজের) জীবনকে সহজ করে দেবার জন্যে সাতটি অসাধারণ লাইফহ্যাক!
খেলাধুলার ব্যবস্থা করা
আপনার বিড়ালটি কি খুব বোর হয়ে আছে? একটি প্লাস্টিকের স্বচ্ছ বাক্স নিন এবং পাশাপাশি কয়েকটা গোল গর্ত করে ভেতরে কিছু খেলনা ফেলে রাখুন। এখন আপনার বিড়াল আপনার আসবাবপত্র খামচে সেগুলোর বারোটা বাজানোর চেয়ে আরো মজার একটি খেলা পেয়ে গেলো!
বাইরে তাকিয়ে থাকাটা আরেকটু উপভোগ্য করা
আমরা সবাই জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে ভালোবাসি। বিড়ালের সাথে এদিক থেকে আমাদের বেশ মিল রয়েছে। আপনার বিড়ালটাও জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আকাশ দেখতে খুব ভালোবাসে। একটা কাগজের বাক্স নিন আর আপনার বিড়াল জানালার পাশে যেখানে বসে বাইরে তাকিয়ে দেখে সেখানে তা রেখে দিন। এটি অনেক সহজ একটা কাজ কিন্তু এই সহজ কাজটার মাধ্যমেই আপনি আপনার বিড়ালের আকাশ দেখা আর রোদ পোহানোটাকে আরো সহজ করে দিলেন।
সোফায় বিড়ালের লোম পড়ে থাকলে যা করবেন
বিড়াল সোফায় শুয়ে বসে থাকতে খুব পছন্দ করে। আর যেহেতু তাদের শরীর ভর্তি লোম, কিছু লোম সোফায় পড়ে থাকবেই। একটি রাবারের দস্তানা নিন, হাতে পড়ুন, আর সোফার উপরে হাত ঘষতে থাকুন। এতে করে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হবে আর বিড়ালের লোমগুলো সহজেই আপনার রাবার গ্লাভে চলে আসবে।
সহজেই থাকার জায়গা তৈরি করা
আপনার একটি পুরনো টি-শার্ট আর দুইটি তারের হ্যাঙ্গার নিন। একটি প্লাস ব্যবহার করে হ্যাঙ্গার দুটির তারগুলো খুলে লম্বা একটা তারে পরিণত করুন। তারের দুই মাথাতেই ১০সেন্টিমিটার জায়গা রেখে ৯০ডিগ্রী কোণে বেঁকে ফেলুন, এবং সেই ১০সেন্টিমিটারের মাথায় অল্প একটু জায়গা রেখে আবারো ৯০ডিগ্রী কোণে বাঁকা করুন। (উপরের ছবিতে যেমনটা দেখানো হয়েছে)৷ এবার ৩৫ সেন্টিমিটার প্রস্থবিশিষ্ট একটি কার্ড বের করুন। বাসায় পড়ে থাকা কোন বাক্স কেটে সহজেই এটা বানাতে পারবেন। ছবিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেভাবে কার্ডের উপর তারের দুই প্রান্ত দিয়ে ফুটো করে বসান। এবার অন্য তারটিকেও একইভাবে কার্ডের উপর বসালে ছবির মতোন একটি কাঠামো পাবেন। দুটি তারের সংযোগস্থলে টেপ লাগিয়ে দিন। এবার বাক্সসহ পুরো কাঠামোটিকে আপনার টিশার্ট পড়িয়ে দিন। হাতের অংশটুকুনকে নিচে ভাজ করে সেফটি পিন দিয়ে লাগিয়ে দিন। ব্যাস! তৈরি করে গেলো আপনার বিড়ালের জন্যে একটি ঘর।
বিড়ালের সাথে খেলা করতে পারেন যেভাবে
একটি বড় কাগজের বাক্স নিন, বাক্স আটকানোর অংশগুলো কেটে ফেলুন, বাক্সের একপাশে গোল কিছু গর্ত করুন। এবার আপনার বিড়ালের একটি খেলনা নিন এবং একটি শক্ত কাঠি বা তার খেলনাটার সাথে লাগিয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেলো আপনার বিড়ালের জন্যে মজার একটি খেলা যাতে আপনিও সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বিড়ালকে যেভাবে কোন আসবাবপত্রের উপর ওঠা থেকে আটকাবেন
আপনার ঘরের কিছু আসবাবপত্রের উপর আপনি আপনার বিড়ালটিকে দেখতে চান না। কারণ তারা সেখানে থাকা জিনিসপত্র ফেলে ভেঙ্গে ফেলতে পারে। বিড়ালকে কোনকিছু করা থেকে আটকানো বেশ কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। হয় আপনাকে বিড়ালের ভাষা শিখতে হবে বা আপনার বিড়ালটিকে মানুষের ভাষা বুঝতে হবে যার কোনটাই সম্ভব না। তার চেয়ে বরং মোটা একটা টেপ নিন আর আঠালো অংশটা উপরের দিকে রেখে যেখানে আপনি আপনার বিড়ালকে যেতে দিতে চান না সেখানে লাগিয়ে রাখুন। বিড়াল কখনোই তার পা আঠানো কোনকিছুতে লেগে থাকার ব্যাপারটা পছন্দ করে না। আর একবার সেখানে পা পড়লে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার বিড়াল আর ওদিকে যাবে না।
বিড়ালকে গোসলে রাজি করাতে যা করতে পারেন
আপনার বিড়ালকে গোসল করাতে চাচ্ছেন? সে কখনোই খুব আনন্দের সাথে সেটা করতে চাইবে না। ভালো কিছু ঘটলে আপনার বিড়াল এক দৌড়ে গোসলের জায়গা ত্যাগ করবে আর খারাপ কিছু হলে খামচি, কামড় দিয়ে রক্তারক্তি অবস্থা করে ফেলবে। তবে আপনি যদি একটি পুরাতন টাওয়েল গোসলের স্থানে বিছিয়ে রাখেন তাহলে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলাতে পারে। এতে করে আপনার বিড়াল তার পা রাখার মতোন একটা জায়গা পাবে যা তাকে কিছুটা আশ্বস্থ করবে। তবে গোসল করানোর পর আরেকটা টাওয়েল দিয়ে তার শরীরটা মুছে দিতে শরীরটা ভালোমতো শুকানোর ব্যবস্থা করতে ভুলবেন না! নয়তো তার ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।
লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার দিন। কোন অংশ বুঝতে সমস্যা হলে মন্তব্যে জানান। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করবো আপনাকে সেটা বুঝিয়ে দিতে।
সূত্র: সিলভি শোর ইউটিউব ভিডিও অবলম্বনে লেখা৷ পুরো ভিডিওটি দেখতে পারেন এখানে।
Leave a Reply